স্বদেশ ডেস্ক:
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৈধ কাগজ ছাড়া বিপুল পরিমাণের টাকা বহনকালে এভসেক (বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটি) সদস্যদের হাতে আটক হয়েছেন জনতা ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। তার নাম- মাহমুদুর রহমান। গত শুক্রবার রাতে বিমানবন্দরের ৬ নম্বর গেট অতিক্রমের পর টাকাসহ তাকে আটক করা হয়। যািদও মুচলেকা নিয়ে রাতেই তাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ৯টা। শাহজালাল বিমানবন্দরের ৬ নম্বর গেট অতিক্রম করছিলেন জনতা ব্যাংকের বিমানবন্দর বুথের সিনিয়র অফিসার মাহমুদুর রহমান। হাতে ছিল তার মাঝারি সাইজের চামড়ার ব্যাগ। দোতলা থেকে নিচে নামার সময় মাহমুদুর রহমানের চলাফেরা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় কর্তব্যরত এভসেক ফোর্সের সদস্যরা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। ব্যাগে কী আছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি থতমত খেয়ে যান। একপর্যায়ে তার হ্যান্ডবাগ স্ক্যাানিং করে দেখা যায় বান্ডেল বান্ডেল টাকা। পরে এভসেক সদস্যরা ব্যাগটি চেক করে বের করে আনেন ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের কোনো টাকা প্রতিষ্ঠানের বাইরে আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রটোকল ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে। অথচ ওই ব্যাংক কর্মকর্তা বৈধ কোনো কাগজ ছাড়াই এতগুলো টাকা একাই বহন করছিলেন। ফলে কর্মকর্তারা ধারণা করেন- অবৈধ পন্থায় বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের সন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত তিনি। এ টাকা অবৈধ পন্থায় মুদ্রা ক্রয়ের উদ্দেশ্যেই বহন করছিলেন তিনি। সন্দেহ ঘনীভূত হওয়ায় টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র অফিসার মাহমুদুর রহমান তাদের বলেন- এগুলো ব্যাংকের বুথের টাকা।
বুথের টাকা প্রটোকল ছাড়া ব্যক্তির কাছে কেন এবং এ টাকা বহনের বৈধ কাগজ আছে কিনা জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান কিছুই দেখাতে পারেননি গোয়েন্দাদের। পরে বিমানবন্দরে কর্মরত বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের শক্ত জেরার মুখে তিনি কাউকে দিয়ে জনতা ব্যাংকের প্যাডে লেখা একটি কাগজ ধরিয়ে দেন। যেখানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো স্বাক্ষর ছিল না। কাগজে লেখা ছিল- সহকারী মহাব্যবস্থাপক। ফরেন রেমিটেন্স ডিপার্টমেন্ট জনতা ব্যাংক লিমিটেড। লোকাল অফিস ০১, দিলকুশা বা/এ ঢাকা। বিষয়- অত্র বুথে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ের জন্য ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা সরবরাহ প্রসঙ্গে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম তৌহিদুল আহসান আমাদের সময়কে বলেন, ব্যাংকের টাকা ক্রু গেট দিয়ে বহনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ওই ব্যাংক কর্মকর্তা ৬ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে যাচাই-বাছাই করে তাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
রাতের সেই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের বিমানবন্দর শাখার বুথ ইনচার্জ ফারুক হোসেনের সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে বিমানবন্দর বুথের সিনিয়র অফিসার মাহমুদুর রহমানের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।